গাজীপুরে বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে বৃহষ্পতিবার খুন হয়েছে এক কলেজ ছাত্র। এসময় নিহতের বন্ধুও আহত হয়েছে। বান্ধবীকে নিয়ে বাগানে বসে আড্ডা দেওয়ার জেরে এঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসি এ ঘটনায় জড়িত থাকায় দু’যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। এদিকে খুনের এ ঘটনার জেরে বিকেলে উত্তেজিত এলাকাবাসি এক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে।
নিহতের নাম নাঈম সরকার (২২)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের পশ্চিম ভুরুলিয়া এলাকার লোকমান সরকারের ছেলে এবং স্থানীয় মডেল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজী (মিস্ট) এর ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র।
জিএমপি’র সদর থানার এসআই জাহিদুর রহমান ও এলাকাবাসি জানান, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভুরুলিয়া এলাকার মডেল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজী (মিস্ট) এর ছাত্র মুন্না তার কিশোরী বান্ধবীকে নিয়ে বৃহষ্পতিবার বেলা ১১টার দিকে কলেজের পাশ্ববর্তী লালমাটি মাঠ এলাকার রয়েল বাগানে বসে গল্প করছিল। এসময় কয়েক যুবককে সঙ্গে নিয়ে বান্ধবীর দু’ভাই রয়েল ও রানা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মুন্নাকে শাসায় ও মারধর করে। পরে মুন্না সেখান থেকে চলে যাওয়ার সময় স্থানীয় মাহবুব সরকার মার্কেটের সামনে তার পথরোধ করে পুনঃরায় মারধর করতে থাকে যুবকরা। এতে নিরুপায় হয়ে মুন্না তাকে সাহায্যের জন্য বন্ধু নাঈমকে ঘটনাস্থলে ডেকে আনে। এসময় দু’পক্ষের মাঝে বাকবিতন্ডা ও হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে যুবকরা নাঈম ও মুন্নাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে নাইম ও তার বন্ধু মুন্না গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমকে মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় জড়িত থাকায় ইমন (২০) এবং রাজন ও রানার বাবা টিপু সুলতান (৪০) নামের দু’জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে। নিহত নাইমের পিঠে, গলায়, ডান হাতে ও কাঁধে এবং আহত মুন্নার গালে ও চোখে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের একাধিক চিহ্ন রয়েছে। আহত মুন্না গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বোর্ডবাজার পূর্ব কলমেশ্বর এলাকার নাজির হোসেনের ছেলে।
এদিকে হতাহতের ঘটনার জেরে বিকেলে উত্তেজিত এলাকাবাসি রাজন ও রানার নানা সুন্দর আলী ড্রাইভারের দো’তলা ভবনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এ বাড়িতে রাজন ও রানাদের পরিবার বসবাস করে।
গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের ডিএডি মামুন অর রশিদ জানান, অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের জয়দেবপুর ষ্টেশনের ৩টি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়। তারা প্রায় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। আগুনে আসবাবপত্র ও মালামালসহ ওই ভবনের ১২টি কক্ষ পুড়ে গেছে।
জিএমপি’র সদর থানার ওসি মুহাম্মদ আলমগীর ভূঞা জানান, তুচ্ছ ঘটনার জেরে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ব্যাপারে দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।